1. admin@pathagarbarta.com : admin :
মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০১:২৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বাংলাদেশ পোয়েটস ক্লাবের দুইদিনব্যাপী সাহিত্য পর্যটন মিশন মহেশখালী কক্সবাজার ৮ ও ৯ নভেম্বর নবীগঞ্জে শারদ সংকলন ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ প্রকাশিত স্বপ্নবিলাস উন্মুক্ত পাঠাগারের উদ্যোগে পাঠ প্রতিক্রিয়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সৌম্যেন অধিকারীর কণ্ঠে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ স্মরণে প্রথম বাংলা গান মিডল্যান্ডস সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ ইউকে সভায় বার্মিংহামে বিজয় দিবস পালনের সিদ্ধান্ত লেখা আহবান ইউকের বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভা অনুষ্ঠিত “রাষ্ট্র সংস্কারে পাঠাগারের ভূমিকা” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত “রাষ্ট্র সংস্কারে পাঠাগারের ভূমিকা” শীর্ষক সেমিনার লন্ডনে আনন্দ ও উৎসবে দ্বাদশ বাংলাদেশ বইমেলা এবং সাহিত্য সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত

কোটা আন্দোলনকারীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী স্লোগানের নিন্দা জানিয়েছে জাস্টিস ফর বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১ ইন ইউকে

পাঠাগার বার্তা
  • আপডেট সময় : বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪
  • ৬৬ বার পঠিত

জেসমিন মনসুর (কাডিফ, ওয়েলস ইন ইউকে): কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ ও ‘আমরা সবাই রাজাকার’ ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, রাষ্ট্র করোর বাপের না’ তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী স্লোগানের নিন্দা এবং কোনো ভাবেই বাতিল নয়, বরং কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার প্রয়োজন। আন্দোলনের নামে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধার অবমাননাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছে একাত্তরের জানিয়েছেন জাস্টিস ফর বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১ ইন ইউকের নেতৃবৃন্দ।

জাস্টিস ফর বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১ ইন ইউকের সভাপতি ও যুক্তরাজ্য বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা মোহাম্মদ মকিস মনসুর, জাস্টিস ফর বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১ ইন ইউকের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব লিয়াকত আলী,সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ শাফি কাদির, ও প্রেস এন্ড পাবলিক সিটি সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার খায়রুল আলম লিংকন সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ এক যুক্ত বিবৃতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের মিছিল থেকে ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ ও ‘আমরা সবাই রাজাকার’ তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী স্লোগান শুনে শুধু বাংলাদেশের নাগরিক নয় বিশ্বময় বসবাসকারী সকল বাঙালিরা বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে উল্লেখ করে বাঙালির মহান স্বাধীনতাকে কটাক্ষ, একাত্তরের ঘৃণিত গণহত্যাকারী রাজাকারদের প্রতি সাফাই, আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতা তৈরি ও নিন্দা জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর ইতিহাসে এক অনন্য বিশ্ববিদ্যালয় যার প্রতিটি অনু পরমাণুতে একটি জাতির জন্ম ইতিহাস লেখা আছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কর্মচারীরা বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে এবং মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। স্বয়ং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ১৯৭১ এর ২৫ মার্চের কাল রাত্রিতে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী গণহত্যার সূচনা করে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরস্ত্র ছাত্র, শিক্ষক এবং কর্মচারীদের হত্যার মাধ্যমে। সম্প্রতি কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী যে স্লোগান দিয়েছে তাহা কেনো অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতার আদর্শকে পরিত্যাগ করে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাকে বহন করার অধিকার কারও নেই বলে উল্লেখ করে জাস্টিস ফর বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১ ইন ইউকের সভাপতি ও ৭১ এর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ইউকের সহ সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা মোহাম্মদ মকিস মনসুর বলেন আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের একাংশের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এই ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানাই। আশা করি, তাঁরা তাঁদের ভুল বুঝতে পারবেন ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দাবি আদায়ের পথে পরিচালিত হবেন। এই তথাকথিত আন্দোলনের নামে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সামনে রেখে একদিকে যেমন আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়কে অপমান করছে ঠিক তেমনি বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

সম্প্রতি কোটাপদ্ধতি বাতিলের জন্য আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থী সমাজ। ২০১৮ সালে সরকারের কোটাপদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছিলেন। গত ০৫ জুন হাইকোর্ট এই মর্মে নির্দেশনা দেয় যে, কোটাপদ্ধতি বাতিল সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এরপর থেকেই আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি লক্ষ্য করেছে, এই আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে অপমান অপদস্ত করছে। শুধু তা-ই নয়, গত ১৪ জুন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় এলাকা থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নিজেদের রাজাকার দাবি করার যে উদগ্র বাসনার কুৎসিত বহিঃপ্রকাশ দেখিয়েছে, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।সরকারি চাকুরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিলের যে দাবি আন্দোলনকারীরা তুলেছে, তা নিঃসন্দেহে সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮(৪) এবং ২৯(৩)(ক) অনুচ্ছেদের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে কোটাপদ্ধতি বহাল থাকতে হবে। পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রেই সরকারি চাকুরি থেকে শুরু করে নাগরিক নানা সুযোগপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সমতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কোটাপদ্ধতি চালু আছে। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে কোটাব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত। সেখানে চার ধরনের নাগরিকদের জন্য মোট ৪৯.৫ শতাংশ কোটার ব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত। নেপালের সংবিধানে দলিত, আদিবাসী, নারীসহ অন্যান্য নাগরিকদের জন্য ৫৫ শতাংশ সাধারণ কোটা এবং ৪৫ শতাংশ সংরক্ষিত কোটা চালু আছে। পাকিস্তানে সরকারি চাকুরিতে ৯২.৫ শতাংশ কোটা বিভিন্ন প্রদেশের জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইতিবাচক পদক্ষেপ নীতির (Affirmative Action Plan) আওতায় কেবল শিক্ষালাভ বা সরকারি চাকুরিতেই নয়, বেসরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানেও কৃষ্ণবর্ণ, হিস্পানিক জাতি ও আদিবাসীদের জন্য কোটাব্যবস্থার প্রচলন রয়েছে।যে কোনো সভ্য রাষ্ট্রে নাগরিকদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতের জন্য কোটাব্যবস্থার প্রচলন রয়েছে। সেক্ষেত্রে কোন যুক্তিতে আন্দোলনকারীরা কোটাপদ্ধতি বাতিলের দাবি জানাচ্ছে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। তবে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি মনে করে, অন্যান্য দেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বর্তমান বাস্তবতার নিরিখে কোটাপদ্ধতি সংস্কার করা যেতে পারে, কিন্তু কোনোভাবেই বাতিল করা যাবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ম্যাদার অব ইউম্যানিটি দেশরত্ন শেখ হাসিনা যথার্থই বলেছেন বিভিন্ন সময় মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করা হয়েছে এবং তারা তাদের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমি চাই যুগ যুগ ধরে দেশের মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেবে। মুক্তিযোদ্ধাদের সব সময় সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে।’

উল্লেখ্য যে, কোটা আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সংবাদ সন্মেলনে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন বিষয় উল্লেখ্য করে তিনি বলেছেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আমার দাঁড়ানোর কোনো অধিকার নেই। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের আদালতে যাওয়ারও পরামর্শ দেন। তিনি বিচার বিভাগ এবং নির্বাহী বিভাগ সম্পর্কে যেমন সুস্পষ্ট ধারণা দিয়েছেন তেমনি যারা মুক্তিযোদ্ধাদের কটাক্ষ করছেন সে ব্যাপারে সোচ্চার কণ্ঠে বক্তব্য রেখেছেন। সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরাও পাবে না? তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে? আমার প্রশ্ন দেশবাসীর কাছে।’ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এই বক্তব্যকে একটি বিশেষ মহল শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভুলভাবে উপস্থাপন করে সারা দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। কোটা আন্দোলন এখন স্পষ্টতই একটি রাজনৈতিক আবহ লাভ করেছে। একটি বিশেষ গোষ্ঠী দ্বারা এই আন্দোলন পরিচালনা করছে। এটি এখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নয় বলেই বিজ্ঞ মহল মনে করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

এক ক্লিকে বিভাগের খবর

error: Content is protected !!