স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশে ভাষা আন্দোলনের সূতিকাগার ৮৯ বছরের প্রাচীণতম সাহিত্য প্রতিষ্টান সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ এবছর সিলেট বিভাগের ৬জন বিশিষ্ট লেখককে ‘‘কেমুসাস‘‘ সাহিত্য পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করেছে। আসছে ১৬ নভেম্বর ২০২৪ তাঁদেরকে আনুষ্টানিকভাবে পুরষ্কার প্রদান করা হবে। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন রাগিব হোসেন চৌধুরী (১০ম কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার ২০১৯),আবদুল হামিদ মানিক (একাদশ কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার ২০২০), আমেনা আফতাব (দ্বাদশ কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার ২০২২), মুকুল চৌধুরী (ত্রয়োদশ কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার ২০২১), মীর লিয়াকত আলী (চতুর্দশ কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩) এবং শাকুর মজিদ (পঞ্চদশ কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪)। এখানে উল্লেখ্য যে সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ ২০০১ সাল থেকে সিলেট বিভাগের কৃতিসন্তানদের ‘‘কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার‘‘ প্রদান করে আসছে।
২০০১ সালের ১৩ জানুয়ারি প্রথম কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার কথাশিল্পী অধ্যাপক শাহেদ আলীকে প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে ২০০২ সালে সাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল ইসলাম, ২০০৪ সালে গবেষক অধ্যাপক আসাদ্দার আলী, ২০০৬ সালে গবেষক সৈয়দ মোস্তফা কামাল, ২০০৮ সালে গবেষক ড. গোলাম কাদির, গবেষক দেওয়ান নূরুল আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, ২০১০ সালে শিক্ষাবিদ-গবেষক প্রফেসর মো. আব্দুল আজিজ, ২০১৩ সালে সাংবাদিক-বীর মুক্তিযোদ্ধা সালেহ চৌধুরী, ২০১৬ সালে কবি মুফাজ্জল করিম এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালে কবি নৃপেন্দ্র লাল দাসকে কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে ২০২৪ পর্যন্ত কাউকে উক্ত পুরস্কার প্রদান করা হয়নি। পুরস্কার প্রদানের ধারাবাহিকতায় ২০১৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ৬ জন লেখককে সার্বিক সাহিত্যকর্ম বিবেচনা করে কেমুসাস সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে।
১৯৩৬ ঈসায়ী সালে সিলেট বিভাগের খ্যাতনামা সাহিত্যক সাংবাদিক ও সাহিত্য প্রেমীরা সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ প্রতিষ্টা করেন। ভাষা আন্দোলনের সূতিকাগার এই প্রতিষ্ঠানের মুখপত্র ভাষা সৈনিক মুহম্মদ নূরুল হক সম্পাদিক ‘‘মাসিক আল ইসলাহ‘‘ পত্রিকায় পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পূর্বেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানানো হয় এবং ১৯৪৭ সালেই বাংলা ভাষার পক্ষে ৩টি জনসভার আয়োজন করা হয়। এরমধ্যে সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সভাটি উর্দু ভাষার সমর্থক মুসলিমলীগারা পন্ড করে দেয়। কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ‘নজরুল সাহিত্য সম্মেলন’ আয়োজনসহ নজরুল চর্চায় অনন্য ভূমিকা পালন করে। এছাড়া প্রতি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাহিত্য আসর আয়োজন, নিয়মিতভাবে সাহিত্য সাময়িকী আল ইসলাহ প্রকাশনা করছে। সাহিত্য সংসদের অর্ধ লক্ষাধিক প্রাচীন গ্রন্থ সম্বৃদ্ধ পাঠাগার এবং প্রায় সাড়ে ৪ হাপ্রকাশিত জার আইটেম নিয়ে একটি জাদুঘর রয়েছে। এখানে সংরক্ষিত রয়েছে মোগল সম্রাট আলমগীরের হস্থে লিখা ‘‘ পবিত্র কোরআন“‘আজ থেকে ১২৫ বছর পূর্বে স্বরসতী লাইব্রেরী শিলচর থেকে প্রকাশিত ( ১৯১০-১৯১৭) খৃষ্টাব্দ শ্রী অচ্যুত চরন চৌধুরী তথ্যনিধি লিখিত সিলেট বিভাগের একমাত্র নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক গ্রন্থ শ্রীহট্রের ইতিবৃত্ত উত্তরাংশ ও পূর্বাংশ। মাসিক আল ইসলাহ পত্রিকায় প্রকাশিত ভাষা আন্দোলনের সূচনার ইতিহাস। এবং সিলেটের ঐতিহ্য সিলেটী ভাষায় লিখিত অসংখ্য পুঁথির ভান্ডার।
Leave a Reply