প্রেসবিজ্ঞপ্তি : একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান লেখক গবেষক আবীর আহাদ বলেছেন, দেশের সিংহভাগ বীর মুক্তিযোদ্ধা সীমাহীন দুরাবস্থার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। একদিকে বয়সের ভার, নানান রোগাক্রান্ত, মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই, নেই ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধের সাংবিধানিক স্বীকৃতি। অপরদিকে তাদের সন্তান-সন্ততি বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত। জীবনের শেষবেলায় তাদের জীবনে একটু স্বস্তি ও শান্তি প্রদান করা রাষ্ট্রেরই নৈতিক দায়িত্ব। কারণ রাষ্ট্রটি গড়ে উঠেছে এই অবহেলিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব ও ত্যাগে। তাদের প্রতি সবাইকে কৃতজ্ঞ থাকতেই হবে, নইলে সভ্যতা ভব্যতা নৈতিকতা বলে কিছুই থাকে না।
আজ বুধবার এক বিবৃতিতে আবীর আহাদ সিংহভাগ বীর মুক্তিযোদ্ধার যাপিত জীবনের বেদনাত্মক অনুভূতির প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে উপরোক্ত মন্তব্য করে বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে অমুক্তিযোদ্ধাদের বিতাড়ন করে, তাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অবর্ণনীয় দুর্দশার কথা মানবিক বিবেচনায় নেয়ার জন্যে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক ভাতা চলমান বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে যৌক্তিক পর্যায়ে বৃদ্ধি, তাদের চিকিৎসার জন্য মাসিক ভাতার সাথে কমপক্ষে ০৭ হাজার টাকা চিকিৎসা ভাতা প্রদান, গৃহহীনদের জন্য বিনাসুদে মাসিক ভাতা থেকে ৫ হাজার টাকা কেটে রাখার বিধান রেখে কমপক্ষে ২৫ লক্ষ টাকা গৃহঋণ প্রদান করার জন্যেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠানেরও দাবি জানান।
বিবৃতিতে আবীর আহাদ বলেন, অতীতে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি চরম অবিচার করার ফলে তারা পরিবার-পরিজনসহ দুর্বিষহ জীবন যাপন করে আসছেন। বর্তমান বাস্তবতার আলোকে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে পিছিয়ে-পড়া থেকে উঠিয়ে আনার লক্ষ্যে যৌক্তিক পর্যায়ে ‘মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটা’ প্রচলনের পাশাপাশি বিকল্প পন্থায়ও সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তাদের বেকার ছেলে-মেয়েদের প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগ দিতে পারেন। যেমন, পঞ্চম শ্রেণী থেকে দশম পর্যন্ত পড়া ছেলে-মেয়েদের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী, এসএসসি থেকে এইচএসসি পাশ পর্যন্ত তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী, স্নাতক পাশ করাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা এবং স্নাতক সম্মান থেকে মাস্টার্স পাশ করাদের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হিশেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর/পরিদপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, আধা সরকারী প্রতিষ্ঠান, সরকারী ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে পারেন। তিনি বলেন, আমার একান্ত ধারণা, মুক্তিযোদ্ধাদের বয়সের প্রেক্ষিতে তাদের অধিকাংশ সন্তানই সরকারি চাকরির বয়সসীমা অতিক্রম করে গিয়েছে। সে-ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন্য চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা পঁয়ত্রিশ বছর করা হলে তাদের সংখ্যা পনেরো থেকে বিশ হাজারের বেশি হবে বলে মনে হয় না।
পরিশেষে আবীর আহাদ বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শৌর্য ত্যাগ ও বীরত্বকে কোনোকিছু দিয়েই পরিমাপ করা যায় না। তবে যেহেতু তারাও সমাজের মানুষ, তাদেরও মর্যাদা নিয়ে একটু শান্তি ও স্বস্তি সহকারে সমাজে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে, সেহেতু এ-দৃষ্টিকোণ থেকে বঙ্গবন্ধু-কন্যা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উপরোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
আবীর আহাদ
চেয়ারম্যান
একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ
Leave a Reply