1. admin@pathagarbarta.com : admin :
মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বাংলাদেশ পোয়েটস ক্লাবের দুইদিনব্যাপী সাহিত্য পর্যটন মিশন মহেশখালী কক্সবাজার ৮ ও ৯ নভেম্বর নবীগঞ্জে শারদ সংকলন ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ প্রকাশিত স্বপ্নবিলাস উন্মুক্ত পাঠাগারের উদ্যোগে পাঠ প্রতিক্রিয়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সৌম্যেন অধিকারীর কণ্ঠে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ স্মরণে প্রথম বাংলা গান মিডল্যান্ডস সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ ইউকে সভায় বার্মিংহামে বিজয় দিবস পালনের সিদ্ধান্ত লেখা আহবান ইউকের বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভা অনুষ্ঠিত “রাষ্ট্র সংস্কারে পাঠাগারের ভূমিকা” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত “রাষ্ট্র সংস্কারে পাঠাগারের ভূমিকা” শীর্ষক সেমিনার লন্ডনে আনন্দ ও উৎসবে দ্বাদশ বাংলাদেশ বইমেলা এবং সাহিত্য সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত

তারকাদেরকেও প্রযোজক হতে হবে

পাঠাগার বার্তা
  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
  • ১৪৯ বার পঠিত

তারকাদেরকেও প্রযোজক হতে হবে
লিয়াকত হোসেন খোকন

ঢাকার চিত্রজগতে আজ নেই তেমন কোনো প্রযোজক।
টাকা লগ্নি করে ছবি বানাবে -এমনদের কেউ খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না। হারিয়ে গেছে প্রযোজকরা, তাই বছরে ৬০ কি ৭০ টি সিনেমাও নির্মিত হয় না। ঢাকার সিনেমার বিজ্ঞাপনও দেখা যায় না পত্রপত্রিকার পাতায় পাতায়। তাহলে কিসের সিনেমা হয়? দৈনিক পত্রিকাগুলিতে ছবি নির্মাতারা পাঠায় না কোনো সিনেমার বিজ্ঞাপন – সিনেমা নির্মিত হলে তো সিনেমার বিজ্ঞাপন আসবে খবরের কাগজের পাতায় পাতায় । তা আজ কোথায়? তবে পত্রপত্রিকাগুলো সিনেমার তারকা কলাকুশলীদের বাঁচিয়ে রেখেছে পত্রিকা কর্তৃপক্ষ বিনোদনের একটি পাতা প্রকাশের সুযোগ দিয়ে। সেখানে সিনেমার তারকা সম্পর্কিত সাক্ষাৎকার বা নিউজ বিষয়ক খবরাখবর দেখা যায়। কিন্তু সিনেমার কোনো বিজ্ঞাপন তো প্রকাশ পায় না । প্রযোজকের অভাবে অভাবে ঢাকার সিনেমা হয়েছে রুগ্ন – টাকা খরচ করে কোনো ব্যক্তি আর ছবি বানাতে চায় না এখন আর। ছবি বানিয়ে কেউ টাকা জলে দিতে চায় না কেহ।

এদিকে ঢাকার চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নিয়ে ইউটিউবে যে ব্যাপক -উত্তাল – আলোড়ন সাড়া জাগাল, তার কিঞ্চিৎ পরিমাণও ছবি নির্মাণে কেউ আগ্রহ -সাড়া দেখালে লাইফ সাপোর্ট থেকে ঢাকার চলচ্চিত্র অন্তত কিছুটা আলোর মুখ দেখত। আজ ঢাকার চিত্রজগত মরুভূমির মতো খাঁ খাঁ করছে, কাজকর্ম নেই শিল্পী ও কলাকুশলীদের। বেকার ও অলস জীবন বিশেষকরে পুরুষ শিল্পীদের জন্য। এদিকে পরিচালকরা একটা কাজের জন্যে হন্য হয়ে ঘুরেও পাচ্ছেন না। ব্যবসায়ী -প্রযোজকদের ভাগিয়ে আনতেও পারছে না ঢাকার সিনেমা জগতের পরিচালক -শিল্পীরা। সবাই যেন আজ কাজকর্মহীন অবস্থায় বেকার জীবন কী পার করছেন না? কোটি কোটি টাকা উপার্জনকারী শিল্পীরাও শেষ জীবনে সাহায্যের জন্য সরকারের কাছে দ্বারস্থ হচ্ছেন। হায়রে ঢাকার সিনেমা জগত! এ লজ্জা রাখি কোথায়!

ঢাকার চিত্রজগত সম্পর্কে এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের আগ্রহ আর চোখে পড়ছে না। পেছনের দিকে তাকালে বহু স্মৃতি চোখের পাতায় ভাসে। বাবার মুখে শুনেছিলাম, রামরাজ্য ছবিটি মুক্তির পরে সীতারূপী শোভনা সমর্থকে লোকালয়ে দেখা মাত্র যে কোনো বয়সের পুরুষ -মহিলারা হাত দিয়ে তাঁর পা স্পর্শ করে তাঁকে প্রণাম জানাতেন। বসন্ত চৌধুরী -সুচিত্রা সেন ও অনিল চট্টোপাধ্যায় অভিনীত দীপ জ্বেলে যাই – এই ছবিটি দেখার জন্য কেউ কেউ ৩ টাকার টিকিট একশো টাকা দিয়ে কিনে দেখেছেন। তখন সিনেমা হলের সামনে দর্শকের ভিড় উপচে পড়ত।

ঢাকার সিনেমা দেখার জন্য সেই ১৯৮০ এর দশকেও জনতার ভিড় ছিল। তারপর ধীরে ধীরে ঢাকার চিত্রজগত গৌরবময় ঐতিহ্য হারাতে থাকে। ঢাকার সিনেমা জগতকে বাঁচাতে হলে প্রয়োজনে বড় বড় তারকাকে এখনই হতে হবে প্রযোজক। এদিকে ঢাকার চিত্রজগতে বাঘা বাঘা চিত্রতারকার সংখ্যা প্রায় শতাধিক তো হবে। তাদেরকেও অর্থকড়ি লগ্নি করতে হবে সিনেমা শিল্পের পেছনে। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচনে জয়ী হয়ে বসে থাকলে কী চলবে – খুঁজে খুঁজে ব্যবসায়ী -প্রযোজক বের করতে হবে।

প্রয়োজনে শিল্পীদেরকেও প্রযোজক হতে হবে। একসময় রাজ্জাক, সুজাতা, আজিম, সুচন্দা, কাশেম, ববিতা, সোহেল রানা, শাবানা, রহমান, উজ্জ্বল -প্রমুখ তারকাও সিনেমা শিল্পে অর্থ লগ্নি করে ছবি বানিয়ে ব্যবসায়িক সাফল্য কী অর্জন করেছিলেন। আজিম ও সুজাতা প্রযোজিত টাকার খেলা, প্রতিনিধি ছবিটি দেখার জন্য দর্শকের ভিড় উপচে পড়েছিল প্রেক্ষাগৃহের সামনে – রাজ্জাক প্রযোজিত অনন্ত প্রেম, পাগলা রাজা ; সোহেল রানা প্রযোজিত ওরা ১১ জন, এপার ওপার, মাসুদ রানা ; সুভাষ দত্ত প্রযোজিত সুতরাং, আলিঙ্গন ; রহমান প্রযোজিত দরশন, মিলন সহ – অসংখ্য ছবির সাফল্য চোখের পাতায় আজও জ্বলজ্বল করে ভাসে। দিনের পর দিন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হত সিনেমার বিজ্ঞাপন আর বিজ্ঞাপন। সুলতানা জামান অভিনীত জোয়ার এলো এবং সুজাতা অভিনীত রূপবান শতাধিকবার দেখার সেইসব স্মৃতি ভুলি কেমনে!

সেদিন আর নেই! ঢাকার সিনেমার নায়িকাদের নিয়ে
আজ দর্শকদের আগ্রহ কোথায়? আশা – আকাঙ্খা থাকে কিন্তু এ প্রজন্মের চিত্র নায়িকারা কি ফুল হয়ে
সিনেমা দর্শকদের কি সুভাস ছড়িয়ে দিতে পারছেন? হতে কি পারছেন ফুটন্ত ফুল! দর্শক তো আর নেই – এ প্রজন্মের নায়িকারা বিকশিত হওয়ার সুযোগই তো পাচ্ছেন না।

একটা যুগ গেছে শবনম, চিত্রা সিনহা, সুলতানা জামান, কবরী, রেশমা, সুচন্দা, ববিতা, শাবানা, সুজাতা নাম শুনতেই জনতার ঢল নামত প্রেক্ষাগৃহের সামনে জনতা আজও কি ভুলতে পেরেছে – ডাকবাবু, মধুমালা, প্রতিনিধি, জীবন মরণ, অবুঝ মন, টাকার খেলা, মেঘ ভাঙা রোদ, আলিবাবা, সাহেব বিবি গোলাম, অশ্রু দিয়ে লেখাআরও কত কি ছায়াছবির কথা! তখনকার বাঙালি সিনেমা দর্শকদের হৃদয়ে এক একটি ফুল হয়ে গেঁথে রইল। আজও অনেকে বলেন, হৃদয়ের অতল গভীরে গোলাপ নয়তো সূর্যমুখী হয়ে ফুটে রইল নায়িকারা তারাই ছিলেন সত্যিকার অর্থে নায়িকা – অভিনেত্রী ও তারকা। জীবনের পড়ন্ত বেলায় এফডিসির পানে তাকালে মনে হয় – সেই ফুলগুলি ফুটে অতীতের গৌরবময় সাফল্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে কি যাচ্ছে না! আর এখন যখন শুনি নব প্রজন্মের ফুল প্রস্ফুটিত হওয়ার জন্য কাজের অভাবে আকাশে বাতাসে উড়ে বেড়ায় তখন সিনেমা প্রেমিক হিসাবে লজ্জায় মাথা হেট হয়ে আসে।

লেখক : প্রাবন্ধিক; রূপনগর, ঢাকা, বাংলাদেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

এক ক্লিকে বিভাগের খবর

error: Content is protected !!