স্টাফ রিপোর্টার : রংপুরের ঐতিহ্যবাহী মাহিগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরি এখন শুধুই স্মৃতি। উনিশ শতকে রংপুরের আদি শহর ছিল মাহিগঞ্জ। সাধারণ মানুষের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে তাজহাটের জমিদার গোপাল লাল রায় ১৯১০ সালে মাহিগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেন। অনেক মূল্যবান ও দুর্লভ বই ছিল এ লাইব্রেরিতে। যার সংখ্যা দশ হাজারেরও বেশি ছিল। একসময় পাঠকের পদচারণায় মুখরিত থাকত এটি। একে কেন্দ্র করেই তখন সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা হতো। লাইব্রেরির মাঠে সপ্তাহ জুড়ে চলত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটক, যাত্রাপালা। অনুষ্ঠানে জমিদার গোপাল লাল রায় অতিথি থাকতেন। এই লাইব্রেরি পরিদর্শন করতে এসেছিলেন- নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, কথা সাহিত্যিক শরত্চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শেরে বাংলা একেএম ফজলুল হক, পল্লী গানের সম্রাট আব্বাস উদ্দিনসহ অবিভক্ত ভারতবর্ষের অনেক রাজনৈতিক নেতা, গুণী সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী লাইব্রেরিটিকে ধ্বংস করে তারা রাজাকার ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করে। লাইব্রেরির বই জ্বালিয়ে রান্না-বান্নার কাজ করে। স্বাধীনতার পর অবশ্য লাইব্রেরিটি চালু করা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৮২ সালে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। প্রাচীন স্থাপনাটি এখন এটি ধ্বংসের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। ভবনটিও যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে। ঐতিহ্যবাহী ‘মাহিগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরি’ কে পুননির্মাণ করার দাবী এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের।
Leave a Reply