1. admin@pathagarbarta.com : admin :
মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বাংলাদেশ পোয়েটস ক্লাবের দুইদিনব্যাপী সাহিত্য পর্যটন মিশন মহেশখালী কক্সবাজার ৮ ও ৯ নভেম্বর নবীগঞ্জে শারদ সংকলন ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ প্রকাশিত স্বপ্নবিলাস উন্মুক্ত পাঠাগারের উদ্যোগে পাঠ প্রতিক্রিয়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সৌম্যেন অধিকারীর কণ্ঠে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ স্মরণে প্রথম বাংলা গান মিডল্যান্ডস সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ ইউকে সভায় বার্মিংহামে বিজয় দিবস পালনের সিদ্ধান্ত লেখা আহবান ইউকের বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভা অনুষ্ঠিত “রাষ্ট্র সংস্কারে পাঠাগারের ভূমিকা” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত “রাষ্ট্র সংস্কারে পাঠাগারের ভূমিকা” শীর্ষক সেমিনার লন্ডনে আনন্দ ও উৎসবে দ্বাদশ বাংলাদেশ বইমেলা এবং সাহিত্য সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত

আমার মা : বিশ্ব মাতা

পাঠাগার বার্তা
  • আপডেট সময় : সোমবার, ৮ মে, ২০২৩
  • ১৯১ বার পঠিত

আমার মা : বিশ্ব মাতা

রত্নদীপ দাস রাজু

আজ বিশ্ব মা দিবস। শুধু এই একদিন নয়, মা-বাবা প্রতিনিয়তই সন্তানের অস্তিত্ব জোড়ে থাকেন। আজকের এই দিনে আমি এক জয়ীতা মায়ের গল্প আপনাদের শোনাতে চাই। যিনি একাধারে একজন সফল গৃহিণী, একজন সফল চাকুরীজীবী, সমাজের প্রতি গভীর দায়িত্বশীল সমাজকর্মী, পিতা-মাতার প্রতি কর্তব্য পরায়ণ সুসন্তান এবং সন্তানদের কাছে স্নেহময়ী তথা দায়িত্ব পরায়ণ মা। এই বহুমাত্রিক ব্যক্তিটি হলেন আমার জন্মদাত্রী আমার প্রিয় মা- শ্রীমতি রত্না দাশ।

‘মা’ একটি মাত্র অক্ষরে একটি শব্দ, যা বিশ্বভ্রমাণ্ডের যত শব্দ পুঞ্জি আছে এর মধ্যে সব চেয়ে উৎকৃষ্ট, আকর্ষণী ও মাধুর্যমণ্ডিত শব্দ। আর এই এক শব্দই যে কোন সন্তানের হৃদয়ের যত শূন্যতাই থাকুক না কেন, তা মুহূর্তের মধ্যেই বিলীন করে দেয়ার এক অভূতপূর্ব ক্ষমতা রাখে। সৃষ্টিকর্তার কী অপূর্ব লীলা। তাইতো কবি বলেছেন-

‘মা নাই গৃহে যার
সংসার অরণ্য তার,
দেখিলে মায়ের মুখ
দূরে যায় সব দুখ।’

আমার মা বর্তমান সমাজের জন্য একজন আদর্শ মায়ের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। মা পেশায় ছিলেন একজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) ও বাবা একজন স্কুল শিক্ষক (বর্তমানে প্রয়াত)। ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি মা ভোরে ঘুম থেকে উঠে সাংসারিক কাজ-কর্ম সম্পাদনের পাশাপাশি আমাদের চার ভাই-বোনদের লেখাপড়ায় বসানো, নাশতা করানো, তারপর স্নান করিয়ে খাবার খাইয়ে স্কুলে পাঠানো, বাবাকে কাজে সহযোগিতা করা, নিজে অফিসে যাওয়া, বিকেল বেলা বাড়ি ফিরে আবার গৃহস্থালি কর্ম, আমাদের পড়াশোনায় সহযোগিতা, পেশাগত দায়িত্বের বাইরেও বাড়িতে কোন রোগী আসলে তাকে চিকিৎসা-পরামর্শ দেওয়া, পরিবারের অন্য সদস্যদের ভালো-মন্দ দেখা, নিজের মা-বাবার খোঁজ-খবর নেওয়া ও প্রতি শুক্রবারে ছুটির দিনে তাঁদের দেখে আসা। সর্বোপরি কোন ধরনের গৃহকর্মী ছাড়াই সমগ্র গৃহস্থালি ও অফিসিয়ালি কাজ একাই সামলাতেন। বর্তমানে চাকুরীতে অবসর নিলেও তাঁর ভোর ৫টায় ঘুম থেকে ওঠা আর রাত ১টায় ঘুমানোর অভ্যাস এখনও বিদ্যমান। এত কিছুর পরও তিনি চাকুরী জীবনে দুবার শ্রেষ্ঠ পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা হিসেবে সম্মাননা সহ অনেক কৃতিত্ব অর্জন করেন।

আমাদের জন্য মায়ের ত্যাগের দৃষ্টান্ত দীর্ঘ, যার সবটুকু লিখলে পাঠকের ধর্যচ্যুতি ঘটবে। শুধু একটি মাত্র উদাহরণ দিয়ে আজকের নিবন্ধ ইতি টানবো। ২০০০ সাল। আমার মায়ের কর্মস্থল নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। ঐ সময় তাঁর উপজেলা পর্যায়ে সিনিয়র ভিজিটর পদে প্রমোশনের চিঠি আসে। ডিপার্টমেন্ট ও পরিচিতজনরা খুশি হলেও তাঁর মাঝে সে-রকম কিছু নাই। কারণ এ পদে তাঁকে যোগদান করতে হলে, তাঁকে যেতে হবে আজমিরীগঞ্জ উপজেলায়। আমরা ভাই-বোনরা ছোট, কেউই মাধ্যমিকের গণ্ডি পাড় হইনি। সংসার ও আমাদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটবে, তাই তাঁকে আর এ প্রমোশন গ্রহণ করা সম্ভব হয় নি। অথচ এ প্রমোশন পেতে তাঁর অনেক সহকর্মী বিভিন্ন উপায়ে বহুবার চেষ্টা করেও পননি।

আজীবন ত্যাগের মহিমায় ভাস্কর আমার মায়ের জীবন। বাবার প্রয়াণের পর আমাদের ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে বহু ঝড়-ঝাপটা আসলেও মা আমাদের আগলে রাখছেন। এখন মা শুধু মা নন, তিনি মা-বাবা দুই-ই। শুধু পরিবার পরিজনের প্রতিই নয়, সমাজের প্রতি তাঁর দায়িত্ব-কর্তব্য পালন নির্দ্বিধায় তাঁকে একজন আদর্শিক ব্যক্তি হওয়ার অধিকার রাখে। তাই আমার দৃষ্টিতে আমার মা বিশ্ব মাতা। আমার মা সহ বিশ্বের সকল মায়েদের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও নিষ্কলুষ জীবন কামনাই হোক এবারের মা দিবসে পরম করুণাময়ের কাছে আমাদের সবার ঐকান্তিক প্রার্থনা।

লেখক : সম্পাদক, পাঠাগার বার্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

এক ক্লিকে বিভাগের খবর

error: Content is protected !!